
প্রকাশিত: Thu, Mar 14, 2024 12:38 PM আপডেট: Tue, Jun 24, 2025 7:59 PM
[১]বহুল আলোচিত সগিরা মোর্শেদ হত্যা: ২ জনের যাবজ্জীবন, ২ জন খালাস
এম.এ. লতিফ, আদালত প্রতিবেদক: [২] বুধবার ঢাকার বিশেষ দায়রা জজ মোহাম্মদ আলী হোসাইন ৩৫ বছর আগে পারিবারিক দ্বন্দ্বে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে সগিরা মোর্শেদকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ২ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ২ আসামীকে খালাস দিয়েছেন আদালাত।
[৩] যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মারুফ রেজা ও সগিরা মোর্শেদের ভাসুর ডা. হাসান আলী চৌধুরীর শ্যালক আনাস মাহমুদ ওরফে রেজওয়ান। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন নিহতের ভাশুর ডা. হাসান আলী চৌধুরী ও তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা ওরফে শাহীন।
[৪] ২৫ জুলাই, ১৯৮৯ সগিরা মোর্শেদকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় সগিরার স্বামীর করা মামলায় মারুফ রেজা ও আনাস মাহমুদকে আসামি করা হয়।
[৫] ১৬ জানুয়ারি, ২০২০ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম আদালতে চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২ ডিসেম্বর, ২০২১ ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত সগিরা মোর্শেদের ভাসুরসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এর মধ্যদিয়ে দীর্ঘ ৩১ বছর পর এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরু হয়। এরপর গত বছরের ১১ জানুয়ারি মামলার বাদী ও সগিরা মোর্শেদের স্বামী আব্দুস সালাম চৌধুরী আদালতে সাক্ষ্য দেন। এ মামলায় ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত।
[৬] সগিরা মোর্শেদ হত্যার ঘটনায় করা মামলা ২৫ জন তদন্ত কর্মকর্তা বিভিন্ন সময় তদন্ত করেছেন। ১৭ জানুয়ারি, ১৯৯১ মন্টু নামে একজনকে আসামী করে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। এরপর মামলাটি উচ্চ আদালত স্থগিত করে। [৭] পরবর্তীতে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২০১৯ সালে মামলাটি তদন্তের ভার পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
[৮] তদন্তে নেমে পিবিআই জানতে পারে, মারুফ রেজা মামলা স্থগিতাদেশের জন্য আবেদন করেন। সেখান থেকে পুনরায় তদন্ত শুরু করে পিবিআই। তদন্তের পর এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। গ্রেপ্তারকৃতদের হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে উঠে আসে সগিরা মোর্শেদকে হত্যা করার আদ্যোপান্ত।
[৯] ডা. হাসান আলী চৌধুরী আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে বলেন, তিনি ইস্কাটনে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন এবং আসামী মারুফ রেজা তার রোগী ছিলেন, সে শহরে মাস্তানি করতো। সগিরা মোর্শেদকে শায়েস্তা করার জন্য তিনি তাকে ২৫ হাজার টাকা চুক্তিতে ভাড়া করেন। যেহেতু মারুফ রেজা সগিরা মোর্শেদকে চিনত না তাই তাকে চিনিয়ে দেওয়ার জন্য তার শ্যালক আনাস মাহমুদকে দায়িত্ব দেন ডা. হাসান আলী চৌধুরী।
[১০] ২৫ জুলাই ডা. হাসান আলী চৌধুরী দুপুর দেড়টা থেকে দুইটার মধ্যে মারুফ রেজাকে সগিরা মোর্শেদ চিনিয়ে দিতে আনাসকে টেলিফোনে মৌচাক যেতে বলেন। হাসান আলী চৌধুরীর কাছ থেকে বিস্তারিত টেলিফোনে জেনে মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে বের হয়ে প্রথমে বাসে, পরে টেম্পুতে করে বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে আনাস মৌচাক পৌঁছান। আনাস পৌঁছানোর প্রায় ১৫/২০ মিনিট পর মারুফ রেজা মোটরসাইকেলে মৌচাক পৌঁছান। সেখান থেকে মোটর সাইকেলে করে তারা দুই জন ভিকারুননিসা নূন স্কুলের গেটের একটু দূরে বসে সগিরা মোর্শেদের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।
[১১] বিকেলে সগিরা মোর্শেদ বড় মেয়েকে স্কুল থেকে আনার জন্য বাসা থেকে বের হয়ে ছালাম মোল্লা নামে এক রিকশাচালকের রিকশা ভাড়া করে স্কুলের দিকে রওনা দেন। মালিবাগ মোড় পেট্রোল পাম্পের সামনে গিয়ে মৌচাকের গলির ভিতর দিয়ে সগিরা মোর্শেদের রিকশাটি সিদ্ধেশ্বরীর মাঝামাঝি অতিক্রমকালে আগে থেকে অপেক্ষারত আনাস মাহমুদ আঙ্গুল দিয়ে মারুফ রেজাকে ‘এটা সগিরা মোর্শেদ’ বলে চিনিয়ে দেয়।
[১২] মারুফ রেজা তাৎক্ষণিকভাবে মোটর সাইকেলে করে রিকশাটি কিছুক্ষণ ফলো করে। পরবর্তীতে রিকশার সামনে গিয়ে মোটরসাইকেল দিয়ে ব্যারিকেড দিয়ে দাঁড় করায়। এরপর তারা দুজন মোটরসাইকেল থেকে নেমে যায় এবং মারুফ রেজা সগিরা মোর্শেদের হাতের ব্যাগ ছিনিয়ে নেয় এবং পরনে থাকা স্বর্ণালংকার ধরে টানা হেঁচড়া করতে থাকে। এসময় সগিরা মোর্শেদ চিৎকার চেচাঁমেচি করতে থাকেলে মারুফ রেজা তাকে থ্রেট করে।
[১৩] তখন সগিরা মোর্শেদ তার সাথে থাকা আনাস মাহমুদকে চিনে ফেলে এবং বলেন,‘তুমি তো রেজওয়ান, তোমাকে আমি চিনি। তুমি এখানে কেন’। এ কথা বলার পরপরই মারুফ রেজা কোমরে থাকা রিভলবার বের করে এক রাউন্ড গুলি করে, এ গুলিটি সগিরা মোর্শেদের ডান হাতের কনুইয়ের নিচে লাগে। আনাস মারুফ রেজাকে গুলি করতে বাঁধা না দেয়ায় মারুফ আরেক রাউন্ড গুলি করে। দ্বিতীয় গুলি সগিরা মোর্শেদের বুক ভেদ করে সোজাসুজি পিঠ দিয়ে বের হয়ে যায় এবং রিকশার হুড ছিদ্র হয়ে যায়।
[১৪] আনাস মাহমুদ আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেন, সগিরা মোর্শেদের বুকে গুলি লাগার সাথে সাথে তিনি রিকশার বাম দিকে হেলে পড়েন এবং তার পুরো শরীরসহ রিকশা রক্তাক্ত হয়ে পড়ে।
[১৫] ভীতি ছড়ানোর জন্য তখন মারুফ রেজা উপরের দিকে এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এরপর তারা সেখান থেকে হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের সামনে দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় সগিরা মোর্শেদকে বহনকারী রিকশাচালক ছালাম মোল্লা একটি ইট হাতে হাইজ্যাকার হাইজ্যাকার বলে চিৎকার করতে করতে ধাওয়া করে।
[১৬] শান্তিনগরের কাছে হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের সামনে মারুফ রেজা আনাস মাহমুদকে মোটর সাইকেল থেকে নামিয়ে দেয়। এদিকে রিকশাচালক ফিরে এসে দেখেন সগিরা মোর্শেদ নেই। পরে তিনি রমনা থানায় গিয়ে বিষয়টি জানান।
[১৭] পিবিআই ঢাকা মেট্রো (দক্ষিণ) এর পুলিশ পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত করে ১৫ জানুয়ারি, ২০২০ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। সম্পাদনা: ইকবাল খান
আরও সংবাদ
[১]সরকার ধৈর্য্য ধরলেও সন্ত্রাসীরা দেশের অনেক জায়গায় তাণ্ডব চালিয়েছে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
[১]রাজধানীর মোড়ে মোড়ে আওয়ামী লীগের জমায়েত
[১]আন্দোলনকারীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে এনায়েতপুর থানায় হামলা চালায় [২]সারাদেশে পুলিশের অনেক স্থাপনা আক্রান্ত
[১]সুশাসন নিশ্চিতে রাষ্ট্রকাঠামো ঢেলে সাজানোসহ ১১ দফা দাবি টিআইবি’র
[১]ড. ইউনূসকে ৬৬৬ কোটি টাকা কর পরিশোধ করতে হবে: হাইকোর্ট
[১]রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংসসহ নৈরাজ্যকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান: ইকবাল সোবহান চৌধুরী

[১]সরকার ধৈর্য্য ধরলেও সন্ত্রাসীরা দেশের অনেক জায়গায় তাণ্ডব চালিয়েছে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

[১]রাজধানীর মোড়ে মোড়ে আওয়ামী লীগের জমায়েত

[১]আন্দোলনকারীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে এনায়েতপুর থানায় হামলা চালায় [২]সারাদেশে পুলিশের অনেক স্থাপনা আক্রান্ত

[১]সুশাসন নিশ্চিতে রাষ্ট্রকাঠামো ঢেলে সাজানোসহ ১১ দফা দাবি টিআইবি’র

[১]ড. ইউনূসকে ৬৬৬ কোটি টাকা কর পরিশোধ করতে হবে: হাইকোর্ট
